Cityzen's Charter

সিটিজেন চার্টার

বর্তমানে প্রতিটি সরকারি দপ্তরে অফিস বিল্ডিং এর নীচে বা দৃশ্যমান কোন স্থানে একটি সাইনবোর্ড দেখা যায় যেখানে অফিসের কার্যাবলী লিপিবদ্ধ থাকে। এটিই মূলত সংশ্লিষ্ট অফিসের সিটিজেন চার্টার বা সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি। এটিকে নাগরিক সনদও বলা হয়।   

সিটিজেন চার্টার কী?

একটি অফিস বা দপ্তর কি কি সেবা প্রদান করে থাকে তার ডিক্লেরেশন-ই টা মূলত সিটিজেন চার্টার। তাছাড়াও সেবাগ্রহীতা সেবাটি কিভাবে পেতে পারে সে বিষয়টিও পরিষ্কারভাবে ডিফাইন্ড করা থাকে।

১৯৯১ সালে যুক্তরাজ্যে সর্বপ্রথম সিটিজেন চার্টার এর সূচনা হয়। সে সময় যুক্তরাজ্যে একটি প্রশ্ন ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছিল। তা হলো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যদি মানসম্পন্ন সেবা দিতে পারে তাহলে সরকারি দপ্তরগুলো পারবে না কেন? নাগরিকেরা আরোও প্রশ্ন করে যদি কাঙ্খিত সেবা না পায় তাহলে করের টাকা ফেরত দিতে হবে। এসবপ্রেক্ষিতেই যুক্তরাজ্যে নাগরিক সনদ কর্মসূচির সূত্রপাত হয়। পরবর্তীতে অন্যান্য দেশেও নাগরিক সনদ প্রবর্তন করা হয়। বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ২০০৭ সালে সিটিজেন চার্টার প্রবর্তন করা হয়।  বর্তমানে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির আওতায় প্রতিটি দপ্তর সিটিজেন চার্টার প্রণয়ন করেছে। 

সিটিজেন চার্টার এর গঠন কাঠামো

সিটিজেন চার্টার মূলত ০৩ টি প্রধান বিষয়/সেকশন নিয়ে গঠিত হয়।

. মিশন ও ভিশন

প্রতিটি সেবাপ্রদানকারি প্রতিষ্ঠানের সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি বিষয়ক মিশন ও ভিশন বর্ণনা করা হয় উক্ত সেকশনে।

. সেবার তালিকা

উক্ত সেকশনে কোন প্রতিষ্ঠান বা দপ্তর যতগুলো সেবা অফার করে থাকে তার বিশদ বিবরণ লিপিবদ্ধ করা হয়। সেবা সাধারণত ০৩ ধরনের হয়ে থাকে- নাগরিক সেবা, আভ্যন্তরীন সেবা এবং প্রাতিষ্ঠানিক সেবা।

৩. অভিযোগ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি

কোন সেবা গ্রহীতা সেবা প্রাপ্তিতে অসন্তুষ্ট হলে কিভাবে এবং কার সাথে যোগাযোগ করে প্রতিকার পেতে উক্ত সেকশনে সে বিষয়টি বর্ণনা করা হয়।

সর্বোপরি সেবা গ্রহীতাকে তার অধিকার সম্পর্কে সচেতন করতে সিটিজেন চার্টার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। কেননা সিটিজেন চার্টার হতে একজন নাগরিক তার প্রাপ্য প্রয়োজনীয় সেবাটি পেতে কিভাবে কোথায় যেতে হবে, কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে বা সেবাটি পেতে কি পরিমান অর্থ খরচ হবে তার একটি ধারণা লাভ করতে পারে। বর্তমানে প্রতিটি দপ্তর ওয়েবসাইটে তাদের সিটিজেন চার্টার আবশ্যিকভাবে পাবলিশ করছে যাতে করে সেবা গ্রহীতা কোন রকম বাড়তি হয়রানি ছাড়াই সেবাটি সহজেই পেতে পারে । সামগ্রিক দিক বিবেচনায় আমরা আশা করতে পারি সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সিটিজেন চার্টার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

Leave a Reply